স্বদেশ ডেস্ক:
আমের বৃহত্তম পাইকারি বাজার রাজশাহীর বানেশ্বর। এই বানেশ্বর আম মোকামের আমের চাহিদা রয়েছে দেশের সর্বত্র। কিন্তু ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার ঘোষণার তিন দিন অতিবাহিত হলেও রাজশাহীর প্রবেশদ্বার পুঠিয়ার বানেশ্বরে আমের দেখা মেলেনি। আমের আড়ৎদাররা জানান, ২০ মে’র আগে আম বেচাকেনার কোনো সম্ভাবনা নেই বানেশ্বরে।
গত বছর থেকে এবার ১০ দিন আগেই গুটি জাতীয় আম দিয়ে রাজশাহীর আম পাড়ার মৌসুম শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার। তবে আমচাষীরা বলছেন, আম বিক্রির মৌসুম শুরু হলেও বাগান গুলোতে আম পাকা শুরু হওয়া তো পরের কথা পরিপক্কতাও আসেনি এখনো।
এদিকে প্রকার ভেদে কয়েকটি ধাপে আম পাড়তে ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার দিয়েছেন জেলা প্রশাসন। তবে অপরিপক্ব আম পাড়া বন্ধে ও মানবদেহের ক্ষতিকারক কার্বাইড মিশ্রিত আম বাজারে কেনা-বেচা প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সতর্কতা দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
গত বুধবার জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, ৪ মে গুটি আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের আম পাড়া কার্যক্রম। সে মোতাবেক গোপালভোগ আম সংগ্রহ করা যাবে ১৫ মে থেকে। লক্ষণভোগ ও রানীপছন্দ আম পাড়া যাবে ২০ মে থেকে। এছাড়াও হিমসাগর/খিরসাপাত ২৫ মে, ল্যাংড়া আম ৬ জুন, আম্রপালী ১০ জুন, ফজলি আম ১৫ জুন নামানোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আর গৌড়মতি, আশ্বিনা ও বারি-৪ আম ১০ জুলাই নামাতে পারবেন বাগান মালিকরা। আর সবার শেষে ২০ আগস্ট থেকে বাজারে পাওয়া যাবে ইলামতি জাতের আম।
শাহবাজপুর গ্রামের বাগান মালিক এনামুল হক বলেন, গত বছর এই অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে এ বছর অনেক বাগানে আমের মুকুল দেখা দেয়। কিন্তু এবার মৌসুমের শুরু থেকে কোনো বৃষ্টিপাত ছিল না। তার উপর মাত্রাতিরক্ত তাপদাহে অনেক মুকুল ও কুঁড়ি গুলো শুকিয়ে ঝরে গেছে। সম্প্রতি শিলাঝড় ও বৃষ্টিপাত হওয়ায় বেশির ভাগ আম ঝরে গেছে। এখন গাছে দেখি শিলার আঘাতে অনেক আম ফেটে যাচ্ছে। সেই সাথে কিছু আমে পচন রোগ দেখা দিয়েছে। এতে এ বছর বাগান মালিকরা কিছুটা লোকসানের আশঙ্কা করছে। কোনো জাতের আম এখনো পাকেনি।
বানেশ্বর বাজারের আম ব্যবসায়ী মাহমুদুর রহমান বলেন, এবার কয়েকদিন আগেই আম কেনা-বেচা শুরু হলো। তবে আমের পরিপক্কতা না হওয়ায় বাজারে আম আসেনি। তবে আগামি ১০/১৫ দিন পর থেকে আম কেনা-বেচা শুরু হবে এখানে।
বানেশ্বর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া, দুর্গাপুর, চারঘাট, কাঁঠাখালিসহ অর্ধেক এলাকার আম কেনাবেচা হয় বানেশ্বরে। বাগানে বাগানে আমগুলো এখনো পরিপক্ব হয়নি। আমের আড়ৎগুলোরও কোনো প্রস্তুতি নেই। ঢাকা, সিলেট, নোয়াখালী, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি ক্রেতারা আসে এখানে। আম কেনাবেচা শুরু না হওয়ায় তারা কেউ যোগাযোগ করেনি এখনো। ২০ মে’র আগে আম বেচাকেনার সম্ভাবনা নেই বানেশ্বর বাজারে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ বলেন, জেলার সর্ববৃহৎ আম বাজার পুঠিয়ার বানেশ্বর। তাই আম কেনাবেচায় অনিয়ম না হয় সে ক্ষেত্রে আম আড়ৎ গুলোতে আমাদের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মনিটরিং থাকবে। আর কোন আম কখন পাড়তে হবে তার একটি দিক নির্দেশনা জেলা প্রশাসন থেকে ইতোমধ্যে দেয়া হয়েছে।